বেড়া প্রতিনিধি :

পাবনার বেড়ায়  শিল্প ও বাণিজ্য মেলার নামে অশ্লীল নাচগান, জুয়া আর মাদকের রমরমা ব্যবসা করার অভিযোগ আয়োজকদের বিরুদ্ধে। ফলে বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকসহ সচেতন মহল। বিঘিœত হচ্ছে আশপাশের কমপক্ষে ১৫/২০ টি শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষা কার্যক্রম। সামনে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কিত সচেতনমহল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেড়া পৌর এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রশাসনের অনুমতি নেয়া হয়েছে এমন প্রচারণা চালালেও মানা হচ্ছে না মেলার বিধিবিধান ও শর্ত। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অশ্লীলতাসহ মাদকের রমরমা ব্যবসা চলছে। কয়েকদিন আগেই ওই মেলার পাশে থেকে র‌্যাব ১০৪ কেজি গাজা উদ্ধার করে। দিনে দুপুরে ২০ টাকার টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হয়। ভিতরে যাত্রার মেয়েদের নিয়ে চলছে গান বাজনা সহ নানা অপকর্ম। রাত গভীর হলেই শুরু হয়ে অশ্লীল নাচগানের আসর।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত যত গভীর হয় নর্তকিদের পোশাকও ছোট হতে থাকে। এছাড়া লটারির নামে প্রতিরাতেই জুয়ার আসর বসিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

সাঁথিয়া ও বেড়া সীমান্তবর্তী স্থানে এই মেলায় হওয়ায় বেড়া নির্বাহী অফিসার ও সাথিয়ার নির্বাহী  অফিসার কার্যালয় সূত্র দাবী করছে, বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড মাঠে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলার অনুমতি রয়েছে সেখানে নাচ গান জুয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। চলতি  মার্চ  পর্যন্ত এ মেলা চলবে।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, জেলায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসারে জনমত সৃষ্টির জন্যই এ মেলার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু মেলার মধ্যে চুরিমালা, স্যান্ডেল ও ভাজা মুড়ির দোকান ছাড়া আর কিছু নেই বলে তারা জানতে পেরেছেন। সেখানে মন্দ বা খারাপ কোনো কিছু হলে বন্ধ করে দেওয়া হবে ওই মেলা।

বেড়ার সাবেক ছাত্রনেতা ও ছাত্র অভিভাবক সোহাগ হোসেন জানান, আয়োজকরা বাণিজ্য মেলার অনুমতি নিয়ে লটারি, মাঝে-মধ্যে জুয়া এবং পুতুল নাচের আড়ালে অর্ধনগ্ন নৃত্য পরিবেশন করছে। আশ পাশে প্রায় ১৫/২০ টি স্কুল কলেজ রয়েছে। স্কুলগামি ছেলে মেয়েরা লেখাপড়াসহ যাতায়াত করতে তাদের বিঘিœত হচ্ছে। তিনি আরও জানান, গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চমাত্রার মাইক ও বাদ্যযন্ত্রের শব্দে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়ালেখার সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। সামনে এস,এসসি, এইচএসসি পরীক্ষার সময়ে এই অসামাজিক কর্মকান্ড বন্ধের আহবান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও সেখানে নগ্ননৃত্যের পাশাপাশি ওয়ানটেন ও চরকা খেলা হচ্ছে। গ্রামের শত শত যুবক এই জুয়ার আসরে এসে নিঃস্ব হয়ে বাড়ি ফিরছে। তিনি দাবী করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কঠোর নিষেধ রয়েছে, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে যাত্রা বা সার্কাসের অনুমতি দেওয়া যাবে না।

বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড মাঠে আয়োজিত মেলার বিষয়ে মেলার স্বত্ত্বাধিকারী মালিক আরিফ ও রাসেদুল হক রাসু জানান,  রাত ১০টার পরে মেলায় মাইক বাজানো হয়। তবে শব্দ যতটুকু নিয়ন্ত্রণ করা যায় তার চেষ্টা করছি। তিনি জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য হচ্ছে না বলে দাবি করেন।

জুয়া ও লটারি খেলা নিয়ে বেড়া সার্কেলের এএসপি কল্লোল কুমার দত্ত জানান, আমি স্টেশনের বাইরে ছিলাম। এমন অভিযোগ পাইনি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বেড়া পৌর সভার প্যানেল মেয়র তারেক হোসেন অশ্লীল নৃত্য আর পুতুল নাচের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মেলায় সার্কাস চলছে। সমস্যা হওয়ার কথা নয়।