ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৭ জুলাই ২০২৩
  1. ই পেপার
  2. ক্যাম্পাস
  3. খেলা
  4. চাকরি
  5. জাতীয়
  6. জীবনযাপন
  7. ধর্ম
  8. পাঠক কলাম
  9. পাবনা জেলা
  10. বাণিজ্য
  11. বাংলাদেশ
  12. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ সংবাদ
  15. বিশ্ব

ঈশ্বরদীতে হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিচ থেকে বালু মহাল সরানোর নির্দেশ

বার্তা কক্ষ
জুলাই ২৭, ২০২৩ ৩:১৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফারুক হোসেন টুটুল (ঈশ্বরদী প্রতিনিধি) : পাবনার ঈশ্বরদীতে হার্ডিঞ্জ ব্রীজ সংলগ্ন রেলের জমি কৃষি কাজের জন্য ইজারা নিয়ে দুই যুগ ধরে বালুর রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা। বিশাল বিশাল বালুর স্তুপের ঢাকা পড়েছে হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ও লালন শাহ সেতু। বালু পরিবহনের ড্রাম ট্রাক, ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের ফলে গাইডব্যাংক (নদী রক্ষা বাঁধ) হুমকির মুখে পড়েছে। রেলের জমিতে বালু ব্যবসার সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে রেল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের ধারণা, রেল কর্মকর্তারা বিশেষ সুবিধা পেয়ে কৃষি জমিতে বালুর ব্যবসার সুযোগ দিয়েছে,। এমন দুর্নাম ঘোচাতে এবার কর্তৃপক্ষ হার্ডিঞ্জ ব্রীজের পাশে বালুর মহাল ও বালুর স্তুপ সরিয়ে নিতে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। ১৬ জুলাই পাকশী ইউনিয়ন জুড়ে মাইকিং করে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বালু অপসারণ করা না হলে নিলামের মাধ্যমে বালু বিক্রি করে দেয়া হবে। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু কেপিআইভুক্ত এলাকা। হার্ডিঞ্জ ব্রীজ এলাকায় দর্শনার্থী রেজিষ্টার নেই, সিসি ক্যামেরা নেই, ব্রীজের উভয় পাশে কাঁটাতারের বেড়া এবং সশস্ত্র টহলের ব্যবস্থা নেই। ফলে ব্রীজের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন, ড্রেজিং, মাছ ধরা, নৌকা ভ্রমণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একই সঙ্গে হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিচে প্রবেশ পথে কাঁটাতারের বেড়া এবং মূল ব্রিজের দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। অথচ হার্ডিঞ্জ ব্রীজ সংলগ্ন রেলের জমি কৃষি কাজের জন্য লিজ নিয়ে কিছু ব্যক্তি অবৈধভাবে বিশাল বিশাল বালুর স্তুপ করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে হার্ডিঞ্জব্রীজ ও লালন শাহ সেতুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর পাশে পদ্মার তীরে গাইডব্যাংকের বিশাল এলাকাজুড়ে বালুর স্তুপ। এখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক হাজার ট্রাক বালু বিক্রি হয়। টাকার হিসাবে এখানে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকার বালু বেচাকেনা হয়। এসব বালুর স্তুপ থেকে ট্রাকপ্রতি এবং বালুর ফুট হিসাবে অনুযায়ী চাঁদা আদায় করা হয়। এ চাঁদার ভাগ ভাটোয়ারা হয় নানা মহলে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস শুরু থেকেই বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছেন। পরে ক্ষমতাসীন দলের আরও অনেকে এ ব্যবসায় জড়িত হয়েছে। রেলের জমিতে বালু ব্যবসার সুযোগ দিয়ে রেল কর্মকর্তারা অনৈতিক সুবিধা নেন, এমন দুর্নামও রয়েছে। অভিযুক্ত এনামুল হক বিশ্বাস বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদেরকে বলেন, এক সময় বালুর ব্যবসা করতাম। এখন আর ব্যবসা করি না। আমার কোন বালু মহাল বা বালুর স্তুপ নেই। এখানে যারা বালু ব্যবসা করে, তারা রেলের নিকট থেকে জমি লিজ নিয়েছে। বালুর স্তুপ সরিয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের সময় দেয়া প্রয়োজন। ৩০ জুলাই সময়ের মধ্যে বালু অপসারণ করা সম্ভব না।
বালু ব্যবসায়ী ও যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা মাসুম বলেন, বালু অপসারণের জন্য মাইকিং করা হয়েছে শুনেছি। এত স্বল্প সময়ের মধ্যে বালু সরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল ইসলাম বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকার আশপাশে আগে নদী থেকে বালু তোলা হলেও এখন হয় না। অন্য এলাকা থেকে নৌকায় বালু এনে এখানে স্তুপ করে ব্যবসা করা হয়। নৌকায় বালু আনতে ঘাটে ঘাটে চাঁদা দিতে হয় বলে শুনেছি। বালু ব্যবসার সঙ্গে কোনোদিনই জড়িত ছিলাম না।
পাকশী রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিইএন-২) বীরবল মন্ডল বলেন, বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গাইডব্যাংক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিরাপত্তার স্বার্থে বালু মহাল বা বালুর স্তুপ এখান থেকে সরানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বালুর স্তুপ এখান থেকে সরানোর পর ব্রীজের নিরাপত্তার জন্য আশপাশের এলাকা কাটা তারের বেড়া দেয়া হবে। পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ভূ-সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বালু ব্যবসায়ীরা এখান থেকে বালু সরিয়ে না নিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দৈনিক এরোমনি প্রতিদিন ডটকম তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন অনলাইন নিউজ পোর্টাল