মোঃ সোহাগ চোকদার ,স্টাফ রিপোর্টার :
আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের প্রধান সড়কপথের উপরে সাধুঘোষ পাড়ার পশ্চিমে চোকদার বাড়ীর উত্তরে শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী সাধুঘোষ পাড়ার সর্বজনীন পুকুরের পূর্ব পাড়ে রাতের আঁধারে কে বা কাহারা বিল্ডিং ভাঙ্গা রাবিস ফেলে রেখেছে!!!
সাধুঘোষ পাড়ার পুকুরটি আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন একটি পুকুর। সাধুঘোষ পাড়ায় সনতন ধর্মাবলম্বীদের দূর্গাপূজাসহ অন্যান্য সকল পূজা উদযাপনের জন্যে বহু যুগের প্রাচীন স্থায়ী একটি মন্দির রয়েছে। এই মন্দির কেন্দ্রিক বাৎসরিক একনাম, গীতা পাঠের আসর দূর্গাপূজাসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় সকল ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে যুগের পর যুগ ধরে।
এসব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার ভক্ত দর্শনার্থীরা যোগদান করেন । তাদের ব্যবহারের জন্যে সাধুঘোষ পাড়ার পশ্চিম পাশের ৩৬ শতাংশের ছোট্ট পুকুরটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বটে। এছাড়াও সাধুঘোষ পাড়ার বাসিন্দাদের দৈনন্দিন পানি সংক্রান্ত কাযকর্মের জন্যে একমাত্র অবলম্বন এখন ছোট্ট এই পুকুরটি। পুকুরের পূর্বপাড়ে একটি প্রাচীণ সিঁড়িঘাট রয়েছে।এই সিঁড়িঘাটেই গ্রামের বাসিন্দারা দৈনন্দিন কাজকর্ম করে থাকেন। প্রায় দশ বছর আগে ভাঙ্গাচূড়া ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাওয়া সিঁড়িঘাটটিকে সরকারী ও ব্যক্তিবিশেষের অর্থায়নে মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়। উল্লেখ্য বছর বছর দূর্গাপূজা শেষে দূর্গা প্রতিমা বিসর্জন এই পুকুরেই দেওয়া হয়ে থাকে।
**পুকুরটির উত্তর পশ্চিম পাড়ের কর্নারে সাধুঘোষ পাড়া বাসিন্দাদের গণ শৌচাগার ছিলো। যা এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
পুকুরটির দক্ষিণ পাড়ে ১৯৫৬ সাল থেকে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার মরহুম আব্দুর রশিদ চোকদার তার বড় ছেলে বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা, মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা,শিক্ষক, মরহুম চোকদার মোহাম্মদ আলী মাস্টারের পরিবার ও তার ভাই ভাতিজাদের পরিবারের সকল সদস্যদের বসবাস। উল্লেখিত পুকুরটির দক্ষিণ পাড়টি ছিলো জঙ্গল, পঁচা ময়লা আবর্জনায় ভরা পরিবেশ দূষণকারী একটি অংশ। প্রায় দশ বারো বছর পূর্বে পুকুরটির অন্যতম মালিকানা দাবিদার পরিবার প্রয়াত বলহরি মেম্বারের ছেলেদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সম্মতি সাপেক্ষে পুকুরের দক্ষিণ পাড়টি প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে পুকুর পাড়ের অনেক গভীর থেকে আরসিসি ঢালাই করে বাঁধানো হয় এবং একটি নয়নাভিরাম সিঁড়িঘাট নির্মাণ করা হয়। তাতে পুকুরটির সৌন্দর্য্য বর্ধণের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ রোধ হয়, দূর হয় পুকুরের পানি দূষণ।
পুকুরটিকে ঘিরে ছোট্ট জঙ্গলটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে আসছে যুগের পর যুগ ধরে। এই জঙ্গলে প্রকৃতি ও মানুষের বন্ধু অধুনা বিলুপ্তপ্রায় গুইসাপের বসবাস। আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের গুইসাপের অভয়ারণ্য খ্যাত সাধুঘোষ পাড়ার ছোট্ট এই পুকুর ও পুকুরের আশপাশের ঝাড় জঙ্গল।
বর্তমানে গুইসাপ নিধন ও গুইসাপের বিচরণ ও আবাস ক্ষেত্র নিধনও আইনত দন্ডণীয় অপরাধ।
প্রাচীন পুকুর, নদী,খাল, ডোবাসহ জলাশয় রক্ষায় বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ও তার স্বাক্ষরিত প্রকল্প ” সারাদেশের পুকুর- নদী-খাল- জলাশয় রক্ষায়, উদ্ধার ও খনন প্রকল্প” এর আওতায় ইতিমধ্যে নদী-খাল-পুকুর উদ্ধার ও খনন কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এক শ্রেণির ভূমিদস্যুর কু দৃষ্টি রয়েছে এসব নদী,খাল,পুকুর,জলাশয়কে বালি দিয়ে ভরাট করে দখল পূর্বক অবৈধ বসত অথবা বিক্রির পাঁয়তারা।
ইতিপূর্বে যারা খাল পুকুর জলাশয় ভরাট করেছেন , জন অভিযোগ ও তদন্ত পূর্বক সেই সব দখলকৃত নদীর জায়গা, পুকুরের জায়গা, খালের জায়গা পর্যায়ক্রমে অচিড়েই উদ্ধার করা হবে বলে সরকার ঘোষণা দিয়েছেন আইন করেছেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
সরকারী লিসের জায়গায় স্থায়ী ইমারত গড়া সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। সরকারের দেয়া লিজের জায়গা ক্রয় বিক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ও দন্ডনীয় অপরাধ।
যে জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত এবং আদালতের নির্দেশ ব্যতীত সেই জায়গা ভরাটকরা সহ যে কোনো অস্থায়ী স্থায়ী স্থাপনা গড়ে তোলা দন্ডণীয় অপরাধ।
এ বিষয়ে ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ খোরশেদ আলম তালুকদারকে মোবাইলে কল দিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন যে এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না তবে ঘটনা সত্য হলে তিনি আইনানুগ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
দৈনিক এরোমনি প্রতিদিন ডটকম তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন অনলাইন নিউজ পোর্টাল