বঙ্গবন্ধুর নৌকাই জোছনা বেগমের একমাত্র সম্ভব, অবলম্বন
সোহাগ চোকদার
খালের পাড়ে পানির উপর ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি ছোট্ট ডিঙি নৌকা নোঙর করা। নৌকাটি থেকে ধোঁয়া বেরুচ্ছে! ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে ছিলাম, সাথে বালিগাঁওয়ের শিপু। নৌকা থেকে আগুনের ধোঁয়া বেরুতে দেখে কৌতুহলে শিপুকে বিদায় জানিয়ে ব্রিজ থেকে নেমে নৌকাটির মুখে আসতেই দেখি নৌকার মাথায় ষাটোর্ধ্ব একজন বৃদ্ধা নারী। নৌকার ডগায় ছোট্ট একটি মাটির চুলায় রান্না করছেন। নাম জিজ্ঞেস করতেই “জোছনা বেগম” বলেই আমার নাম ঠিকানা জানতে চেয়ে তার সম্মুখে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলেন। আমিও বললাম। তিনি একাকী বলে যাচ্ছেন “কতো মানুষ ঐ ত আহে কেউ আর কিছু দেয় না” আপনে আমারে ভিডিও কইরা কি করবেন? সরকার ত কিছু দিব? আপনি ত মনে হয় সরকারি লোক। আমি বললাম না, আমি কোনো সরকারি লোক নই আপনাদেরই সন্তান। এখানেই আমার বাড়ী।
তা আপনার বয়স কতো? জোছনা বেগম বললেন তার বয়স সত্তরের উপরে হবে। তার জন্ম এই বেদে পল্লীতেই। স্বামী মারা গেছেন। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়ে জোছনা বেগম এখন একাকী এই নৌকাতেই বসবাস করেন। রান্নার হারি পাতিল থেকে শুরু করে তার প্রয়োজনীয় তৈজসপত্র। চাউল, আটা, লবন,চিনি, তৈল পেঁয়াজ, মরিচ থেকে সব কিছুই ছোট ছোট কৌটায় ভরে নৌকার ভেতর তাক বানিয়ে রেখেছেন। বালিশ কাঁথা চাঁদর সহ ঘুমোনোর সব ব্যবস্থাও নৌকার ভেতরেই। নৌকায় বসে বসে বড়শি দিয়ে মাছ ধরেন, বিক্রি করেন, নিজেও রান্না কর খেয়ে থাকেন। বংশ পরম্পরায় প্রায় শত বছর ধরেই জোছনা বেগমরা টংগিবাড়ী উপজেলার সোনারং টংগিবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণের শেষ সীমানায় খালপাড়ের সামান্য জায়গায় বসবাস করে আসলেও অদ্যাবধি সরকার তাদেরকে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্যে খাল পাড়ের এই সামান্য জায়গা টুকু তাদের নামে বরাদ্দ দিয়ে স্থায়ী করে দেননি বলে জোছনা বেগম জানালেন। ঝড় বৃষ্টি রৌদ্র, শীত ও গরম সব ঋতুতে সকল আবহাওয়াতেই জোছনা বেগম এই নৌকাতেই থাকেন। বলেন জায়গা দিয়া কি অইবো!? মইরা গেলে মাটি দিয়া লাইবো, পুইরা লাইবো। হেয় মইরা গেছে, মাইয়ারা চইলা গেছে, কিসের আবার ঘরদুয়ার, কিসের দালান বাড়ী? যুদ্দ দেকলাম, কতো কি দেকলাম, এহন চইল্যা যাওনের সময় অইছে। বেবাকতেরে দেহা আছে!? বেবাকতেঅই বালা,
দিন দুনিয়া কিছুই নারে বাপু, দিন দুনিয়া কিছুই না”””””
দৈনিক এরোমনি প্রতিদিন ডটকম তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন অনলাইন নিউজ পোর্টাল