ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আলীম।
১৯ অক্টোবর, শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে আসলে এ ঘটনা ঘটে।
পরে প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র-উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা তাকে উদ্ধার করে থানায় সোপর্দ করেন।
জানা যায়, আব্দুল আলীম বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় তার অনার্স শেষ বর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর প্রায় আধা ঘণ্টা পর পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেন আলীম। এ খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাংলা বিভাগের সামনে জড়ো হয়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। পরে দুপুর দুইটার দিকে তাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র-উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে থানায় সোপর্দ করা হয়। তাকে নিয়ে আসার সময় শিক্ষার্থীরা তাকে অতর্কিত চড়-থাপ্পড় মারেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আন্দোলন চলাকালীন ওই ছাত্রলীগ নেতা হলে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের জোরজবরদস্তি করতো। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অসুস্থ শিক্ষার্থীকে সহযোগিতা নামে উত্তোলনকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল আলিম জানান, আমি কাউকে না বলে নিজের উদ্যোগে পরীক্ষা দিতে এসেছি। ভাবছিলাম দেরিতে এসে পরীক্ষায় এটেন্ড করে পাশ মার্ক তুলে আগে আগে চলে যাবো। কিন্তু বুঝতে পারিনি বিষয়টা এতদূর গড়াবে।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এ অর্থ নিজের হাতেই নেই নি। এ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে আমি শাস্তি মাথা পেতে নেব। আমি শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। পোস্টেড থাকায় ছাত্রলীগের মিছিল মিটিংয়ে যেতাম। তবে আমি রাজনীতি করতে কাউকে বাধ্য করিনি।
বিভাগের শিক্ষকরা জানান, আমরা জানতামই না এমন কেউ পরীক্ষা দিতে এসেছে। পরীক্ষা চলাকালে বাইরে হট্টগোল দেখে সেখানে গিয়ে জানতে পারি তার কথা। পরে প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র উপদেষ্টা ও সমন্বয়কদের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, শিক্ষার্থীরা উত্তপ্ত ছিল। শিক্ষকদের উপস্থিতিতে তাকে আমরা প্রটেকশন দিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার করে থানায় সোপর্দ করি।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এক ছাত্রলীগ নেতাকে আমাদের কাছে সোপর্দ করেছে। এখন সে আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, আমরা ঘটনা জানার সাথে সাথে সেখানে উপস্থিত হই। পরে প্রক্টোরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় সোপর্দ করা হয়। তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দৈনিক এরোমনি প্রতিদিন ডটকম তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন অনলাইন নিউজ পোর্টাল